Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
গল্প নয় সত্যি
ডাউনলোড

বাংলাদেশের উত্তর জনপদের সীমান্তবর্তী একটি জেলা দিনাজপুর। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো হলো উত্তরে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়, পূর্বে নীলফামারী ও রংপুর, দক্ষিণে জয়পুরহাট ও নওগাঁও এবং পশ্চিমে (তৎকালীন দিনাজপুর জেলার পশ্চিম অংশ) পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। দিনাজপুর জেলার উল্লেখযোগ্য একটি উপজেলা চিরিরবন্দর। জেলা শহর দিনাজপুর থেকে ১৫ কিলোমিটার পূর্বে, পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কের রাণীরবন্দর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, দিনাজপুর-ঢাকা মহাসড়কের আমতলী বাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে এবং চিলাহাটি-খুলনা রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন ও পার্বতীপুর উপজেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে এই উপজেলাটি অবস্থিত। উপজেলা সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত চিরিরবন্দর রেলওয়ে স্টেশন। যে স্টেশনটি দিনাজপুর ও চিরিরবন্দর এলাকাবাসীর রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব সহজ ও দ্রুততম করে দিয়েছে।

 

উপজেলা সদরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে চিরিনদী। যে নদীর পাশেই গড়ে উঠেছিলো তৎকালীন আমলের পানি পথের বানিজ্যলয়। আর সেই নদী ও নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা বন্দরের নামেই এই উপজেলার নাম করণ করা হয়েছিলো চিরিনদীর বন্দর থেকে চিরিরবন্দর। পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বাংলাদেশের মানচিত্রে স্থান করে নেওয়া কাঁকড়া নদী।

দিনাজপুর জেলার অনান্য কিছু উপজেলাগুলোর মতোই চিরিরবন্দর উপজেলার মানুষের প্রধান কর্মই ছিলো কৃষিপণ্য উৎপাদন। লোকজনের জীবিকা ছিলো সম্পূর্ণ কৃষির উপরেই নির্ভর। উল্লেখ্য দেশের বিখ্যাত কাটারীভোগ চালের সিংহভাগ চাল এই উপজেলাতেই উৎপন্ন হয়।

 

কৃষিতে অত্র উপজেলার খুব ভালো অবস্থান থাকলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে এই জনপদের মানুষ ছিলো বহুলাংশে পিছিয়ে। হাতে গোনা কয়েকটি স্কুলে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে অনেক কষ্ট করে এসে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী লেখা পড়া করতো।

বর্তমানে চিরিরবন্দর উপজেলার আর সেই চিত্র নেই। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে পূর্ণ ছোঁয়া পড়েছে অত্র উপজেলায়। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে পার্বতীপুর-দিনাজপুর সংযোগ সড়কটি সরু থেকে প্রসস্তকরণ কাজ সমাপ্ত করে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ তিনটি বেইলি ব্রীজের পরিবর্তে কনক্রিটের সেতুর নির্মাণ কাজ। সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন পিপাসু সাধারণ মানুষেরাও থেমে নেই। তারাও রেখে চলেছে উন্নয়নে অংশীদারিত্বের ভূমিকা।

 

শিক্ষাক্ষেত্রে চিরিরবন্দর উপজেলা এখন অনেক এগিয়ে। এখানে বর্তমানে ২০১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭০টি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি মাদ্রাসা এবং কলেজ পর্যায়ের ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গৌরবের বিষয় উপজেলা সদরেই রয়েছে সরকারী জাতীয়করণের তালিকা ভুক্ত  চিরিরবন্দর ডিগ্রী কলেজ ও চিরিরবন্দর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। ৮টি সরকারী অনুমোদন প্রাপ্ত রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল। যে গুলোর ইতোমধ্যেই ৩টি কলেজ শাখাও চালু হয়েছে। বর্তমানে এই স্কুল গুলোতে বাংলাদেশের প্রায় বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থীরা অধ্যয়ন করছে।

কৃষি বিল্পবের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রেও চিরিরবন্দর বর্তমানে পূর্ণ সফল। এক বাক্যেই চিরিরবন্দর বাংলাবাসীর কাছে আজ শিক্ষা নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পাঠদান সহ শিক্ষার মান উন্নয়নে সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি বজায় রেখে গুণগত শিক্ষা দানের সাথে সাথে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম যেমন খেলা-ধুলা, সঙ্গীতচর্চা, ছবি আঁকা, আইসিটি, জ্ঞান অন্বেষন, বিতর্ক প্রতিযোগিতার মতো অন্যান্য বিষয়গলোতেও সমান দক্ষতা অর্জন করে দেশের সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠছে।

 

বর্তমানে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে অধ্যয়ন শেষে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তির সুযোগ সৃষ্টি করে অধ্যয়ন শেষে চাকুরী ক্ষেত্রেও সরকারী বে-সরকারী উচ্চ পদগুলো দখল করে চলেছে।

উল্লেখ্য যে এ যাবত আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে একজন ছাত্র জাতীয় রানার-আপ এর পুরস্কার অর্জন করেছে, একজন ছাত্র জ্ঞান অন্বেষন প্রতিযোগিতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার অর্জন করেছে এবং একজন ছাত্রী স্বর্ণ কিশোরী নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়েও সহপাঠ্যক্রমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে অংশগ্রহণ করে চিরিরবন্দরের সুনাম বয়ে এনেছে।

 

আজকের এই শিক্ষা নগরীর রূপকার ও পথিকৃৎ বাংলাদেশের স্বনামধন্য অর্থোপ্যাডিক চিকিৎসক ডাঃ এম. আমজাদ হোসেন। যিঁনি প্রথম এবি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমেনা-বাকী রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল। যাঁর পদানুসারে গড়ে উঠেছে অনেকগুলো অত্যাধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চিরিরবন্দর এলাকাবাসীর স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার নেতৃত্ব দিয়ে বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়নে চিরিরবন্দর অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।